Wednesday, 1 March 2017

মনের গহীনে স্পন্দন

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ভোর রাত থেকেই শুরু এই আহাজারি। তারপরেও আলসামী করে বারান্দায় আসতে মন চাচ্ছিল না। মদ খাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই নাকি মানুষের ছাপ শুরু হয় প্রস্রাব করার জন্যে। হালার প্রস্রাব, আর সময় পেলো না ছাপ দেয়ার। একটু ঝিম মেরে বসে থাকতেও দিবে না। এই দিকে মন উদগ্রীব হয়ে আছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি দেখার
জন্যে। অন্য কোন সময় হলে এতো আলসামি পেয়ে বসতো না। আজকের ব্যাপারটা একটু অন্য রকম। অনেকদিন পর হাং আউট সাথে একটু ঝিমুনি। ভাবতেই একটু শান্তি আসে মনে। শহুরে এই যান্তিক জীবনে সবসময় ঝিমুনি নেয়ার ব্যবস্থাও বা কই থাকে। প্রতিদিন গদবাধা লাইফ। সকাল সকাল ঘুমাও। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠ। বাসের জন্যে লাইন ধরো। অফিসে কাষ্টমারদের সাথে গ্যাঁজ গ্যাঁজ করা। উও! কি দুর্বিষহ লাইফ। ভাবতেই জীবনের প্রতি এক ধরণের তিক্ততা আসে। এই তিক্ততা থেকে মুক্তি পেতে মাঝে মাঝে এই একটু আক্টু ঘোলা পানি জীবনটায় একটু জীবন দান করে। মানুষটা এমন ই। প্রতিদিন হাংগ খাওয়ার পর এই একই কথা ভাবে কিন্তু সকাল হলে টেন পায়, গত কিছুদিন যাবত সে রীতিমতোই মাল খেয়ে আসছে।
আর সইতে না পেরে অবশেষে জাকির প্রায় বাধ্য হয়ে উঠে পড়লো। বাথরুমে গিয়ে হাই কমেটে তেলাপোকা চোখে পড়লো। শালার তেলাপোকাটাটা শেষ পর্যন্ত তার জিপারের ভেতরে থাকা বস্তুতা দেখে নিলো। জিপারটা আটকাতে আটকাতে তেলোপোকার গুষ্টি সহ খিস্তী মেরে উৎরিয়ে নিলো।
ব্যাপারটা আর সয্য করা যাচ্ছে না। এর একটা বিহিত চাই। আজকে তেলাপোকা শালাকে প্রস্রাব দিয়েই কমেটে ডুবিয়ে মারতে হবে। জিপার খুলতে যাবে। তখন ই দেখে কমেটে উপর নীচ সবখানেই তেলাপোকা আর তেলাপোকা। চোখ একটু ভালো করে ডলে নিলো সে। নিজেকে প্রশ্ন করলো জাকির, হাং কি বেশী হলো নাকি? না এমন তো হওয়ার কথা না। মাল খাওয়ার ব্যাপারে নিজের উপর তো তার যথেষ্ট আস্থা আছে। ওই যে কিছুদিন আগেও তো সুহৃদের সাথে বাজি দরে একটা ফরেন মাল একাই সাবাড় করে দিলো, এটা দেখে বেচারা সুহৃদের মুখের অভিব্যাক্তি দেখার মতো ছিলো। বেচারা বেতন পেয়ে একটা মাল নিয়ে আমার ফ্ল্যাটে উঠলো দু বন্ধু মিলে রাতে জম্পেশ মাল খাবে বলে কিন্তু বাজি দরে তো পুরাই ধরা খেলো। সে জানতো জাকিল মাল ভালো খায় তাই বলে কি পুরো এক বোতল একা খাবে, এটা ঘুরনাক্ষরেও কল্পনায় আসে নি সুহৃদের। মন মরে বেচারা কষ্ট পেলো। বাধ্য হয়ে সারা রাত একটু শাকসবজি খেয়ে কাটিয়ে দিলো। মাঝে মাঝে একটু খক খক কাশি ছাড়া সে রাতে তার কিছুই বলার ছিলো না।
শালার তেলাপোকার দল। কই থেকে আইলো এই সাতসকালে কমেটে মাতব্বরি করতে। তাঁদের আচরন মোটেও তার কাছে সুবিধার মনে হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে জিপারটা টানিয়ে গিজ গিজ করতে বাথরুম থেকে বের হলো।
দূর শালা যে কাজে বিছানা থেকে উঠ কাজটা তো সারাই হলো না। শালার প্রস্রাব ও কম নয়। সুযোগ বুঝে মজা চোদায়। যেই না জিমুনি আসলো তখন ই ছাপ দিতে গেলো। চোদনা এখন নিজেই তেলাপোকা দেখে চোদ গেয়ে গেলো। কই এখন ছাপ দিতে পারে না, তাহলে তেলাপোকা গুলোকে তাড়িয়েও হলেও একটু টাঙ্কি খালি করা যেতো।
বারান্ধায় বসে সিগারেট খাচ্ছে খুব ফিল নিয়ে। আহা জীবন অনেক সুন্দর। আহা জীবন। একটু বেশী হাং খেলে জাকিরের মুখ থেকে সব সময় এই শব্দ গুলোই বের হয়। এতক্ষণ তেলাপোকা আর প্রস্রাবকে খিস্তী কাটলেও এখন মনে হছে তখন না উঠলে বৃষ্টি ভেজা এই সুন্দর সকালটা খুবই মিস করতো।
কুয়াশা মাখা মিষ্টি সকালটা খুবই মোহিত করেছে। নিজেকে আবেগে আপ্লূত করে তুলছে নিজের মধ্যে বাস করা আরেক আমি। তখন নিজে মধ্যে থাকা আরেক আমি বেসুরা গলায় আপনা আপনিতে গেয়ে উঠলো জন ডেনভারের সেই বিখ্যাত গানটা। 'ইউ ফিল আপ মাই সেন্সেস' টানা তিন বার গেয়ে একটু চুপ মেরে গেলো। সে একটুও কল্পনা করতে পারছে না, আসলে সে কতোটা হাংগ খেলো।  
গত এক সাপ্তাহ হলো স্পন্দনের সাথে তার ব্রেক আপ হইছে। স্পন্দন যাওয়ার পর থেকে তাঁর মনের স্পন্দন বেড়ে গেছে, খুবই বেড়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা একটুও মেনে নিচ্ছে না সে বরং সে নিজেকে সবসময় স্বাভাবিক ভেবে যাচ্ছে আর প্রতিরাতে একটা করে ভ্যাট ৬৯ হজম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিরাতের মতো আজকেও একটু বেশী হাংগ হয়ে গেছে। 'ইউ ফিল আপ মাই সেন্সেস' এই লাইনটা আবার গাইলো। যে কেউ শুনলে ভাববে এই শালা গানও শ্লো মোশনে গায়। তাঁর মুখে গানটা প্রায় এই রকম ই শুনা গেছে, 'ইইইউউউ...উ ফি...ল আআআপ মামই সেসেন্সেসসস'। 
লাইনটা শেষ হতেই বারান্ধায় থাকা চেয়ার থেকে থুপ করে পড়ে গেলো জাকিব। শব্দটা শুনালো বড় কোন দানবের শেষ পরিণতির মতো। মনে হলো দিশেহারা হয়ে দানবটা তাঁর রাজ্য থেকে ক্ষমতা হারালো। যেনো থুপ করে নীচে পড়ে তলিয়ে গেলো। তাঁর অবস্থা এমনই ছিলো যে, মনে হচ্ছে একটা দানব মাত্র কই থেকে উড়ে এসে বারান্দার ফ্লোরে পড়লো। তাঁরপর বনের কোনো না জানা জানোয়ারের মতো গোংগিয়ে যাচ্ছে অনবরত। ঘুমের মধ্যে যে মানুষ এখন গহীন অরণ্যে ডুব মেরেছে, তা কি সকালে ঘুম থেকে উঠে বুজিতে পারবে মানুষটা। এমন একটা মানুষকে ঘুমের মধ্যে কতোটা অসহায় দেখাচ্ছে তা কি কখনো দেখতে বা বুঝতে পারবে স্পন্দন। মানুষটার আজকের এই অবস্থার জন্যে পরোক্ষভাবে হলেও স্পন্দনের প্রভাব রয়েছে এ কথা তো জাকির বা স্পন্দন কেউ ই জানতে পারবে না। তারপরেও তো চলতে হবে, জীবনটা যে ভাবে চলে। অন্য সবার মতো তাঁদেরকেও মাথা পেতে বাস্তব মেনে নিতে হবে। না মেনেও বা উপায় আছে! কেউই তো বাস্তবতার উদ্ধে না।

1 comment:

  1. জাকির একটা বোকাচোদা...

    ReplyDelete