Saturday, 1 April 2017

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ

বই মেলা ২০১৭ এর শুরু থেকে আজ অবদি অনলাইন এবং অফলাইনে যে বইটির নাম আমাদের অত্র এরিয়ার শুনা
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইয়ের কাভার
যাচ্ছে, তার নাম “প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ”। বইটির স্রষ্টার নাম আরিফ আজাদ। এটি তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই। 

“প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ” বইটি মূলত আস্তিকবাদ আর নাস্তিকবাদ নিয়ে। আস্তিকতা আর নাস্তিকতার মাঝে যে ব্যাপারটা যুক্ত রয়েছে তা হচ্ছে বিজ্ঞান। মুক্তমনারা বিজ্ঞানসমত্ত এই অর্থে তারা নিজেদেরকে দাবী করেন। তারা বিজ্ঞানের আলোকেই কথা বলতে বা চলতে পছন্দ করেন। অথচ বিজ্ঞান নিজেও পরিবর্তনশীল তখন কি মুক্তমনারা তাদের নিজেদের মনের পরিবর্তন ঘটান, বিজ্ঞানে এমন অনেক ঘটনাই রয়েছে যা আজকে সত্য হলেও আবার কয়েক যুগ পরে নতুন সত্য এসে পুরাতন সত্যকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বইটিতে এমন সব ঘটনার বর্ননা রয়েছে যা আপনাকে বস্তুত উক্ত ব্যাপার গুলো সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা দিবে।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইটি অনেক ইনফর্মেটিভ। ধর্ম আর অস্তিত্ববাধ’র বাহিরেও এখানে বিজ্ঞানের অনেক ব্যাপারে তথ্য এবং ব্যাখ্যা রয়েছে। বইটি যদি ‘আস্তিকবাদ আর নাস্তিকবাদ’ এই খাতিরে পড়তে ইচ্ছে না জাগে, তাহলে ইনফর্মেশন জানার জন্যে হলেও বইটা পড়া উচিৎ বলে মনে করি।


গল্পের শুরুতে আমরা দেখতে পাই সাজিদ নামের ছেলেটি নাস্তিক থাকে। আস্তিকবাদের উপর আস্থা হারিয়ে কিছুকাল আগে সে নাস্তিকতায় যোগ দেয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার সে তাঁর স্রষ্টার ধর্মে ফিরে যায়। এই অল্প সময়ের ট্রানজিটটা তাঁর ধর্মের ভিতটা আরো মজবুত করে। যারা নিজেদেরকে মুক্তমনা বলে দাবী তোলে তাদের মন আসলে কতোটা মুক্ত সে সম্পর্কেও সাজিদের ক্লিয়ার ধারণা তৈরি হয়। পরবর্তিতে বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাথে বিভিন্ন নাস্তিকের যুক্তির খেলা চলে। তাদের প্রতিটা টপিকই থাকে এমন যে, সাজিদকে তা যুক্তি দিয়ে ভেঙ্গে দেখাতে হবে ধর্মের এঙ্গেল থেকে। এভাবেই আস্তিকবাদ আর নাস্তিকবাদের খেলা চলে পুরো বই জুড়ে। যুক্তির খাতিরে ধর্ম, বিজ্ঞান, ইতিহাস কোনটাই বাদ যায় নি। 


 বইটিতে এমন সব মজার এবং গুরুত্বপূর্ন তথ্য রয়েছে যা আপনার অস্তিত্বের দ্বিধাবোধের জায়গা গুলো থেকে আপনাকে অব্যাহতি দিবে। বইয়ের শেষ পর্যায়ে এসে দেখা যায়- Antony flew নামে একজন নাস্তিক ছিলেন। যাকে নাস্তিকদের ভাবগুরু হিসেবে মাণ্য করা হয়। নাস্তিকতার উপর উনি প্রচুর বই লিখেছেন, অনেক যুক্তি ও তর্ক করেছেন। তার লেখার উপর ভর করেই অনেকে নাস্তিকতার পক্ষে কথা বলতেন। কিন্তু ২০০৪ সালে এই নাস্তিকদের গুরুতুল্য এই লোক হুট করেই আস্তিক হয়ে যান। আস্তিক হওয়ার যে কয়েকটি মেজর কারন বা প্রমাণ তিনি উল্লেখ্য করেছেন তার মধ্যে একটি হলো ডিএনএ-এর মধ্যে অপূর্ব তথ্য।

লেখক আরিফ আজাদ তাঁর প্রথম বই হিসেবে যথেষ্ট মুনশিয়ানা দেখিয়েছে লেখায়। এই বইটি লেখার জন্যে তাকে প্রচুর গবেষণা করতে হয়েছে। এই দিক থেকে লেখক সার্থকও বটে। বইটি পড়ার পর যে কেউ বুঝতে সক্ষম হবে; লেখক বিভিন্ন ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন। বিশেষ করে, ধর্ম আর বিজ্ঞান সম্পর্কিত ব্যাপারে।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ লেখক : আরিফ আজাদপ্রকাশনী : গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সবিষয় : অন্ধকার থেকে আলোতে। লেখাঃ মাহতাব হোসেন 

No comments:

Post a Comment